পৃষ্ঠাসমূহ

পুষ্টি সুরক্ষা এবং খাদ্য সংস্থান- পর্ব-৪: ডালের সূচনা (Nutrition security and food - Part-4: Introduction of Pulses)

 সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)

পূর্বের পর্বগুলি পড়ার জন্যে ক্লিক করুন পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩


ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায় তাঁর 'বাঙালীর ইতিহাস' গ্রন্থে প্রাচীন বাংলায় বাঙালির খাদ্যতালিকায় ডালের অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন। নদী মাতৃক জল-বহুল বাংলায় মাছের আধিক্যের কারণে মানুষের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মাছের মাধ্যমে মিটে যাওয়ায় ডালের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপিত হয়নি। আবার বাংলায় ডাল খাওয়ার ভিন্ন রীতি দেখা যায় যেমন ফরিদপুর এবং বরিশালের (অধুনা বাংলাদেশের অন্তর্গত) মানুষ ভাত, তরকারী, এমনকি আমিষ পদ গ্রহণের পর ডাল গ্রহণ করতেন। আবার কিছু মানুষের, যাঁদের পূর্বপুরুষের আদি বাসস্থান কুমিল্লা জিলায় (অধুনা বাংলাদেশের অন্তর্গত), কাছ থেকে জানতে পেরেছি তাঁরাও ডাল সব পদ খাওয়ার পরেই খেয়ে থাকেন। সময় বদলেছে, বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডাল খাদ্যতালিকায় একটি প্রধান পদ বলেই বিবেচিত হচ্ছে।

তবে সমগ্র ভারতবর্ষের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে ডাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য, তা সে ভাত-ডাল- তরকারী হোক বা ডাল-রোটি ডাল পুষ্টি উপাদান বিশেষত প্রোটিনের উৎস। তথ্য পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় ভারতবর্ষের প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন (Maurya et al., 2022) কাজেই ডালের গুরুত্ব সেক্ষেত্রে (নিরামিষ আহারের ক্ষেত্রে) আরো বৃদ্ধি পায় কারণ নিরামিষ আহারের তালিকায় এটি একটি প্রধান প্রোটিনের উৎস। এবার আমাদের দেশে প্রচলিত কয়েকটি প্রধান ডালের তালিকা দেখে নিই। যদিও এর মধ্যে সয়াবিনের ব্যবহার ডাল হিসেবে ভারতবর্ষে খুব একটা বেশি হয় না। প্রধানত খাদ্যোপযোগী তেল উৎপাদনের জন্যে এর ব্যবহার অধিক হয়ে থাকে। তবে সোয়া চাঙ্ক বা সোয়া বড়ির চল বেশ আছে।

Table 1: ভারতবর্ষে প্রচলিত কয়েকটি ডাল

বাংলা/স্থানীয় নাম

ইংলিশ নাম

বিজ্ঞানসম্মত নাম

অড়হর/তুর

Pigeon pea

Cajanus cajan

কুলথি

Horse gram

Dolichos uniflorus

Macrotyloma uniflorum

খেসারি

Grass pea

Lathyrus sativus

ছোলা/চানা

Chick pea

Cicer arietinum

মটর/কড়াইশুঁটি

Pea

Pisum sativum

মথ/মাটকি

Moth bean

Vigna aconitifolia

মসুর/মুসুরি

Lentil

Lens culinaris

মাসকলাই/উর্দ

Black gram

Vigna  mungo

মুগ

Green gram/Mung

Vigna radiata

রাজমা

Kidney bean

Phaseolus vulgaris

লোবিয়া/চৌলি

Cow pea

Vigna unguiculata

বাকলা

Faba bean

Vicia faba

সয়াবিন

Soybean

Glycine max

সেম/ভাল

Lablab bean

Lablab purpureus

ডালের ব্যবহার যে প্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষে চলে আসছে তা ঋগবেদ বা পরবর্তী বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থে ডালের উল্লেখ থেকে বোঝা যায়। যেমন ঋগবেদে এবং পরবর্তী কালে যজুর্বেদে 'খালওয়া' ('Khalva'কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে 'কালায়া' ('Kalaya'এবং বৌদ্ধ শাস্ত্রে 'চানাকা' ('Chanaka'বলে যা উল্লেখিত হয়েছে তা চানা ডাল।  আবার  তুর বা অড়হর ডালকে চরক এবং সুশ্রুত 'আধাকি' ('Adhaki'বলে উল্লেখ করেছেন, বৌদ্ধসাহিত্যেও এর উল্লেখ রয়েছে। কৌটিল্য 'অর্থশাস্ত্রে' একে উদারা ('Udaara') বলে উল্লেখ করেছেন (Nene, 2006)। মুগ ডালের সংস্কৃত নাম 'মুদগা' ('Mudga') আর গাছের নাম 'মুদগাপর্ণী' ('Mudgaparni')। যজুর্বেদেও মুগ ডালকে 'মুদগা' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আবার আমরা যাকে মাস-কলাইয়ের ডাল বলে থাকি তা ব্রাহারন্যকে, মহাভারতে এবং কৃষি-পরাশর গ্রন্থে মাশা ('Masha') নামে উল্লেখিত হয়েছে।  মসুর ডালের সংস্কৃত নাম 'মঙ্গল্যা' ('Mangalya') বা 'মাসুরা' ('Masura') পাওয়া যায়।  আবার কুলথি যজুর্বেদে, এবং বৌদ্ধ এবং জৈন গ্রন্থে 'কুলত্থ্যা' ('Kulottha') নামে উল্লেখিত (Nene, 2006)

ডালের ব্যবহার এদেশে অত্যন্ত প্রাচীন হলেও সকল প্রকার ডালের উৎপত্তি ভারত বা ভারতীয় উপমহাদেশে নয়। যেমন চানা বা ছোলার ডালের উৎপত্তিস্থল তুর্কি-সিরিয়া অঞ্চল, মসুর বা মুসুরির ডালের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া, মটর এবং খেসারির ডালের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ ইউরোপ। বাকলা পশ্চিম এশিয়া, আবার লোবিয়া বা চৌলি পশ্চিম আফ্রিকাতে উৎপন্ন হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে তা বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পরে। অন্যদিকে অড়হর, কুলথি, মথ বা মাটকি, মুগ ইত্যাদি ডালের উৎপত্তিস্থল ভারতীয় উপমহাদেশ (Nene, 2006; Fuller and Harvey, 2006)। Fuller and Harvey (2006) বৈজ্ঞানিক আর্টিকেলটিতে বিভিন্ন সময়কালে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রকার ডালের নিদর্শনের তালিকা উপস্থাপিত হয়েছে। 

এই পর্যন্ত আলোচনা থেকে বোঝা গেলো যে ডাল খাওয়ার প্রবণতা প্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষে রয়েছে। এবার বর্তমান সময়কালের প্রতি দৃকপাত করা যাক। 

যদি বর্তমানে ভারতবর্ষের ডালের উৎপাদনের প্রতি দৃষ্টিপাত করি, তবে দেখা যায়, গত দুই দশক ধরে বিভিন্ন ডাল উৎপাদনের কৃষিজমি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে, যদিও মুসুরির ডালের ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয় (Figure 1)। 


Figure 1: ২০০০ টি ২০২০ পর্যন্ত ফসল (Pulses ) অনুসারে কৃষিজমি আয়তনের হিসাব (Food and Agriculture Organisation হইতে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে Source: FAOSTAT)

অন্যদিকে, চানা, মটর, অড়হর ডালের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও মুসুরির ডালের উৎপাদন খুব একটা বৃদ্ধি পায়নি (Figure 2)। সয়াবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও তা বিভিন্ন সময় উপর-নিচ হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য ডালের (যা উল্লেখিত হয়নি আলাদাভাবে) সমগ্রভাবে  উৎপাদন খুব বেশি বৃদ্ধি পায়নি। 


Figure 2: ২০০০ টি ২০২০ পর্যন্ত ফসল (Pulses ) অনুসারে উৎপাদনের হিসাব (Food and Agriculture Organisation হইতে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে Source: FAOSTAT)

ডাল উৎপাদনে ভারতবর্ষ অগ্রগণ্য, এমনকি সর্বাধিক উৎপাদনশীল হলেও, উৎপাদন থেকে চাহিদা অধিক হাওয়ায় আমদানি করতে হচ্ছে (John et al., 2021; Mishra et al., 2021)। যদি উৎপাদন বৃদ্ধি না পায় তবে উত্তরোত্তর চাহিদা আর উৎপাদনের এই ফাঁক বৃদ্ধি পেতে পারে তা বলাই বাহুল্য। পরবর্তী অধ্যায়ে ডালের পুষ্টি গুণ সম্বন্ধে আলোচনা করবো।

তথ্য সহায়তা (References)

Fuller, D.Q.; Harvey, E.L. 2006. The archaeobotany of Indian pulses: identification, processing and evidence for cultivation. Environmental Archaeology 11: 219-246. https://doi.org/10.1179/17963106x123232

John, A.T.; Makkar, S.; Swaminathan, S.; Minocha, S.; Webb, P.; Kurpad, A.V.; Thomas, T. 2021. Factors influencing household pulse consumption in India: A multilevel model analysis. Global Food Security 29: 100534. https://doi.org/10.1016/j.gfs.2021.100534

Maurya, S.; Tripathy, A.K.; Verma, S.P.; Ali, W.; Shukla, S. 2022. Assessment of baseline nutritional status, vitamin B12, and folate levels in patients with acute leukemia and their effect on initial treatment outcome: A prospective observational study. Indian Journal of Medical and Paediatric Oncology 43(2): 171-176. https://doi.org/10.1055/s-0042-1742665

Mishra, P.; Yonar, A.; Yonar, H.; Kumari, B.; Abotaleb, M.; Das, S.S.; Patil, S.G. 2021. State of the art in total pulse production in major states of India using ARIMA techniques. Current Research in Food Science 4: 800-806. https://doi.org/10.1016/j.crfs.2021.10.009

Nene, Y.L. 2006. Indian pulses through millennia. Asian Agri-History 10(3): 179-202.

নীহাররঞ্জন রায় (বাংলা ১৩৫৬)। বাঙ্গালীর ইতিহাস। দে'জ পাবলিশিং, কলকাতা।

বোলপুর শান্তিনিকেতন (Bolpur Santiniketan)

 সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)


সকাল ১০ টা ১০ র শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস হাওড়া ছেড়ে যখন শান্তিনিকেতন পৌঁছালো তখন বেলা প্রায় সাড়ে বারোটা। বাইরে বেরিয়ে টোটো ধরে হোটেল পান্থনিবাসে পৌঁছলাম প্রায় দেড়টা নাগাদ। এরপর দ্বিপ্রাহরিক আহার সেরে একটু বিশ্রাম নিয়ে প্রথমেই আমরা উপস্থিত হলাম আমখই গ্রামে অবস্থিত জীবাশ্ম উদ্যানে। বীরভূম জেলার ইলামবাজারে অবস্থিত এই গ্রামটিতে ২০০৬ সালে পুকুর খননের সময় সপুষ্পক উদ্ভিদের জীবাশ্ম পাওয়া যায়, সেগুলিকে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে জনগণের, বিশেষত ছাত্র-ছাত্রী, পর্যটক এবং গবেষকদের, জন্যে এই উদ্যানটি স্থাপিত হয় যা সত্যই প্রশংসার যোগ্য। 

জীবাশ্মগুলি প্রদর্শনের পাশাপাশি সেগুলির বর্ণনা এবং সহজভাবে জীবাশ্ম-র সম্পর্কিত (সংজ্ঞা, কিভাবে এগুলি জীবাশ্মে পরিণত হয়েছে ইত্যাদি) তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। প্রস্তরীভূত জীবাশ্ম সমৃদ্ধ এই উদ্যানটি পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত একমাত্র জীবাশ্ম উদ্যান। 

আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে কাষ্ঠ জীবাশ্মগুলিকে আবহাওয়া জনিত পরিবর্তনের (weathering) হাত থেকে রক্ষা করতে এগুলিকে কাঁচের বাক্সে রাখলে আরো ভালো হতো। এরপর পায়ে পায়ে গ্রামবাংলার মেঠো পথ ধরে, দু'পাশে কৃষিজমি রেখে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম কোপাই নদীর ধারে বেশ কিছুক্ষন প্রকৃতিকে প্রাণ ভরে অনুভব করলাম, তখন সূর্য প্রায় ঢলে পড়েছে, ফিরে এলাম হোটেলে। রাতের আহার সেরে আজ বিশ্রাম।

বেশ সকাল সকাল ঘুম ভাঙলো। বেলা ৯ টা নাগাদ আমরা বেড়িয়ে পড়লাম। প্রাতঃরাশ সেরে প্রথম গন্তব্য সৃজনী শিল্পগ্রাম। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশের প্রধানত পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জীবন ধারণ, ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে এস্থানে। প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্যে রয়েছে এক একটি কটেজ (Cottage) আর তার মধ্যে রাখা রয়েছে তাঁদের জীবন ধারণের চিত্র, উপাদান, ঐতিহ্যের নানান নিদর্শন। এখানে স্থান পেয়েছে নিকোবর, আন্দামান, মণিপুর, ত্রিপুরা, অসম, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, বাংলা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রদেশের মানুষের জীবন ধারা।

এরপরের দ্রষ্টব্য উত্তরায়ণ।

'এটা কার বাড়ি?

ছবিতে যে দাদু কে দেখছিস, এটা তাঁর বাড়ি।'

উত্তরায়নের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে সামনের থেকে ভেসে এলো বছর তিন চারেকের দিদি আর ভাইয়ের কথোপকথন। রবি কিরণে উদ্ভাসিত তখন চতুর্দিক, বাইরে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হলেও আজ মন মেঘমুক্ত, যা আছে তা শুভ্র আর তাকে বহন করে চলাই কর্তব্য। দ্রষ্টব্যগুলি ঝাপসা আজ, দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় তাঁর বৌদ্ধিক সত্ত্বার উপর। কবির চেতনা, সংকল্প, দৃঢ়তা, কর্তব্যপরায়ণতা আজ পাথেয়।



রবীন্দ্র সংগ্রহালয়-র নিকটে অবস্থিত রথীন্দ্র সংগ্রহালয়। 

গ্রাম্য ভারতের উন্নতি না হলে দেশের উন্নতিসাধন সম্ভবপর নয়, তা উপলব্ধি করেছিলেন কবি। কৃষির উন্নয়নের পথেই গ্রাম তথা ভারতবর্ষের উন্নতি সম্ভব শিলাইদহের জমিদারী দেখাশুনার ভার কবির উপর ন্যস্ত হতেই তিনি তাঁর গ্রামীণ পুনর্গঠনের চেতনাকে রূপায়িত করেন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কুটির শিল্প, তাঁতবোনা কোনোকিছুই এই পুনর্গঠনের কর্মকান্ড থেকে বঞ্চিত হয়নি। স্বনির্ভর, আত্মবিশ্বাসী গ্রামীণ ভারত গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে কবির দৃঢ় পদক্ষেপ, কৃষি, শিল্প আর ঐতিহ্যের সাথে বিজ্ঞানের মেলবন্ধন সমাজের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেছিল। চাষের জন্যে ট্র্যাক্টর, ধান ভাঙানোর জন্যে হাস্কিং মেশিনের ব্যবহার, গরিব চাষি বা কারিগরের জন্যে স্বল্পসুদে ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্যে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা, বিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। পরবর্তীতে কবির শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, শ্রীনিকেতন স্থাপন এবং এর জন্যে কৃষি অর্থনীতিবিদ L.K. Elmhirst কে আমন্ত্রণ করে আনা, মেয়েদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিকল্পে পদক্ষেপ ইত্যাদি অতি সুপরিচিত। কবি তাঁর সন্তান রথীন্দ্রনাথ, জামাতা নগেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলি (ছোট মেয়ে মীরা দেবী-র সাথে বিবাহ হয়েছিল), বন্ধু শ্রীশচন্দ্র মজুমদারের ছেলে সন্তোষ চন্দ্র মজুমদার কে আমেরিকার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষিবিজ্ঞান শিক্ষা করার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছিলেন। বিশ্বভারতীর প্রথম উপাচার্য রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তত্ত্বাবধানে পরবর্তীকালে গড়ে ওঠে কৃষিবিজ্ঞান বিভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে দেখা হলো কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে, সংগীত, নৃত্য এঁদের পড়াশুনার বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক জীবন, বিভাগের পড়াশুনা পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত হলাম। এখানে শিক্ষক-শিক্ষিকা কে দাদা-দিদি বলা প্রচলিত। শ্রেণীকক্ষের অভ্যন্তরে কবি কখনোই শিক্ষাকে সীমাবদ্ধ করতে চাননি, সেই দর্শন আজও প্রতিফলিত হয় বিশ্বভারতী-তে। শিক্ষাকে বহন না করে বাহন করার কর্তব্য 'লোকশিক্ষা'-য় মনে করিয়ে দেন কবি। তাঁকে উপলব্ধির প্রয়োজনীয়তা চিরকালীন। তাঁর বৌদ্ধিক সত্ত্বাকে মর্মে ধারণ করতে পারলে তবেই সমাজ উন্নততর হতে পারে।


দ্বিপ্রাহরিক আহার সেরে বল্লভপুর অভয়ারণ্য আর তারপর সোনাঝুরির হাট। 

বাউল গাইছে, ধ্বনিত হচ্ছেন লালন ফকির, সহজ ভাষায় জীবন দর্শনের এই বোধ চিরকাল প্রাসঙ্গিক থাকবে। এবার ফিরে চলা, ফিরতে হবে দৈনন্দিন জীবনে কিছুটা উপলব্ধি সাথে নিয়ে।

অগস্ট, ২০১৮

পুষ্টি সুরক্ষা এবং খাদ্য সংস্থান- পর্ব-৩: শাক (Nutrition security and food - Part-3: Green leafy vegetables)

 সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)

পূর্বের পর্বগুলি পড়ার জন্যে ক্লিক করুন  পর্ব-১ পর্ব-২ 


বর্তমান পৃথিবীতে অন্যতম একটি সমস্যা হল 'মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ডেফিসিয়েন্সি' (Micro-nutrient deficiency), যা অনেক সময় 'হিডেন হাঙ্গার' (Hidden hunger) বলেও পরিচিত। পুষ্টির উপাদানগুলির দিকে যদি আমরা তাকাই, তবে দেখব কয়েকটি পুষ্টি উপাদান, যেমন শর্করা (Carbohydrate), স্নেহ পদার্থ (Fat), আমিষ জাতীয় পদার্থ (Protein), আমাদের শরীরে দৈনিক অধিক পরিমানে আবশ্যক বা প্রয়োজন, তাই এই উপাদানগুলিকে 'ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট' (Macro-nutrient) বলা হয়। অপরপক্ষে বেশ কয়েকটি পুষ্টি উপাদান যথা খনিজ (Minerals) এবং ভিটামিন (Vitamins) স্বল্প পরিমানে আবশ্যক, তাই এগুলিকে 'মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট' বলা হয়ে থাকে। স্বল্প পরিমানে প্রয়োজন হলেও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা খনিজ পদার্থ (Minerals) এবং ভিটামিনগুলি অত্যন্ত আবশ্যক, অন্যথায় শারীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়ায় সমস্যা উৎপাদন হয়ে থাকে।। উদাহরণস্বরূপ, প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মানুষ লোহার (Iron) স্বল্পতায় ভোগেন (McLean et al., 2009), আবার প্রায় ১.০২ বিলিয়ন মানুষ ভিটামিন A-র অভাবের শিকার (Akhtar et al., 2013)।

এই হিডেন হাঙ্গার কে প্রতিরোধ করার অন্যতম একটি পথ হল আহারে শাকের ব্যবহার কারণ এর মধ্যে খনিজ, ভিটামিন উপযুক্ত পরিমানে বিদ্যমান এবং নানান কার্যকরী বৈশিষ্ট্যসম্পূর্ণ  রাসায়নিক উপাদানও এর মধ্যে পাওয়া যায়। বাঙালির পাতে শাক নতুন নয়। কবিকঙ্কন মুকুন্দরামের চন্ডীমঙ্গল কাব্যে আহারের বর্ণনায় শাকের উল্লেখ রয়েছে। কবি লিখেছেন:

"প্রথমে শুকুতা ঝোল দিল ঘন্ট শাক

প্রশংসা করয়ে সাধু বেঞ্জনের পাক।

ঘৃতে জবজব খায় মীন মাংস বড়ি

বাদ কর‍্যা খায় ভাজা কই দুই কুড়ি।

অম্বল খাইয়া পিঠা জল ঘটী ঘটী

দধি খায় ফেনি তায় শুনি মটমটী।"

আবার বিভিন্ন প্রকার শাক এবং তাদের রন্ধন প্রক্রিয়ারও উল্লেখ রয়েছে চন্ডীমঙ্গল কাব্যে:

"সাক তুলিতে দুয়া ফিরে বাড়ি বাড়ি

'খে করা নিল দুষা রঙ্গিন চুপড়ি।

নট্যা রাঙ্গা তোলে পাট পালঙ্গ-নলিতা

তিত পলতার পাতা ডগা তুলিল পলতা।

সাজ্যাতা পাজ্যাতা বন-পুই তুলে বলা

হিনচা কলমী শাক তোলে ডানিকলা।

কড়্যা সাক তোলে দুয়া ফিরে খেতি খেত

মহরি সোলপা  ধন্যা খিরপাই বেত।

বাড়ি বাড়ি ফিরে দুয়া দিয়া বাহুনাড়া

ডগী ডগী তোলে পুই পুনুকা কাঁচড়া।

কোমল কাঁকুড়ি-ডগা তুলিল করেলা

নাউডগা তোলে কিছু কচি কচি বলা।

বাছা ধুয়্যা শাক দুয়া করিল সাঁচনা

লতা পাতা শাক আগে রন্ধিল লহনা।

রন্ধন করেন রামা করি বড় ত্বরা

ঘন্টে  পুর‍্যা এড়ে রামা কুড়িয়া পাথরা।

ঘৃতে জবজব রান্ধে নলিতার শাক

কটু তৈলে বাথুয়া করিল দৃঢ় পাক।

রহিত কুমুড়া -বড়ি আলু দিয়া ঝোল

বদরী শকুল মীন আম্রে মুসুরি

পান দুই ভাজে রামা সরল সফরি।

পঞ্চাশ বেঞ্জন অন্ন করিল রন্ধন

থালায় ওদন বাটী ভরিয়া বেঞ্জন।

সাধ খান খুল্লনা নারীজন

অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কন।"

কয়েক দশক পূর্বে খাদ্য তালিকার দিকে দৃষ্টিপাত করলে যে সকল আহার্য বস্তু দৃষ্টিগোচর হবে তা আজ আর হয়না। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বাঙালির শাক জাতীয় খাদ্যের তালিকাটি ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়ছেঅনেক শাক-ই আজ হারিয়ে গেছে। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের অন্যতম কালীপুজোআর তার আগের দিনটিতে চোদ্দ প্রকারের শাক খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। কেন বা কিভাবে এই প্রচলন হলোতা আমি বিশেষ জানিনা। তবে বেশ মনে পড়েছোটবেলায় কখনও মামারবাড়ি গেলে দিদির সাথে ভোরবেলা যেতাম শাক তুলতেযা সব শাক পাওয়া যায় গ্রামের ক্ষেতের পাশেজলা জায়গায়সবগুলো চিনতাম না। পরবর্তীকালে চোদ্দশাক কিনতে বাজারে গেলে লালশাক সহযোগে অনেকটা পাতা দিয়ে দিতে দেখেছিএটাই এখন চোদ্দশাক বলে পরিচিত। কিন্তু একাধিকবার চোদ্দরকমের শাক বাজারে আলাদা আলাদা খোঁজ করে দেখেছি তা জোগাড় করা খুব সহজ নয়। বর্তমান বাজার পালংপুঁইলালএবং কিছু সময় লাউমুলোপাট শাকেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কলমিসাঞ্চেবেতোঘেঁটু শুশনিহেলেঞ্চা ইত্যাদি ধীরে ধীরে সংকোচনের আওতায়, বিশেষত শহর বা শহরতলিতে, এসে পড়ছে। এই সংকোচন কিন্তু আমাদের পুষ্টিকেও সংকুচিত করছে। নিচের টেবিল-১ -এ দেখে নিই প্রচলিত কয়েকটি শাক যা আমরা আমাদের আহারে ব্যবহার করে থাকি।

Table 1: বাংলায় তথা ভারতবর্ষে খাদ্য সিহেবে ব্যবহৃত কতগুলি শাকের তালিকা


এছাড়াও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে আরো বিভিন্ন শাক পাওয়া যায়। কয়েকটি উদাহরণস্বরূপ, উত্তরাখণ্ডের দুম (Allium semnovii), জংলী চউলি (Amaranthus bilatum), ঢোল কানালি (Girardinia diversifolia), পায়ুম (Rumex nepalensis), পুয়ানু (Smilacina purpurea) ইত্যাদি (Mishra et al., 2008), আবার মনিপুরের ইয়েলাং (Polygonum barbatum), থামোউ (Nelumbo nucifera), চিংইয়েঙসিল (Antidesma diandrum) ইত্যাদি (Konsam et al., 2016) উল্লেখ করা যায়। পুষ্টিগত দৃষ্টিকোণ থেকে উল্লেখযোগ্য হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই শাকগুলি আশেপাশের বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্র (চাষের ক্ষেত সংলগ্ন জমি, জলাজমি ইত্যাদি) থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে, বা কখনো ক্ষেতের পাশে শাকগুলি এমনিতেই হয়ে থাকে, সাধারণত চাষ করা হয় না। স্থানীয় মানুষজন সেই সকল শাক সংগ্রহ করে নানান উপায়ে প্রস্তুত করেন। যদি এই উন্নত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন শাকগুলির দিকে মনোনিবেশ করা না হয় তবে নিবিড় কৃষি পদ্ধতি (Intensive agriculture), নগরায়ন (Urbanization) ইত্যাদির চাপে এগুলি ধীরে ধীরে অবহেলিত হতে হতে হারিয়ে যাবে।

এবার শাকের পুষ্টিগুণের দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক। শাকের মধ্যে অধিক পরিমানে আঁশ জাতীয় পদার্থ, খনিজ (পুষ্টি গুরুত্বের) উপযুক্ত মাত্রায় বিদ্যমান থাকার জন্যে এগুলি আমাদের দেহের পুষ্টিসাধনে সহায়তা করে। আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে এর গুরুত্বও খুব বেশি। লাল শাক, মেথি শাক, কুমড়ো শাক তুলনামূলকভাবে অধিক লোহা ধারণ করে। আবার অধিকাংশ শাক যেহেতু ভিটামিন C (এস্করবিক অ্যাসিড) ধারণ করে, যা লোহা শোষণ করতে সহায়তা করে (Timoshnikov et al., 2020), সেইজন্যে শাকের মাধ্যমে শরীরে লোহার প্রয়োজনীয়তা বেশ কিছুটা মেটে।

Table 2: বিভিন্ন প্রকার প্রচলিত শাকের খনিজের পরিমান (mg/100g) (Source: Longvah et al., 2017)


Ca= ক্যালশিয়াম (Calcium), P= ফসফরাস (Phosphorus), Mg= ম্যাগনেশিয়াম (Magnesium), K= পটাশিয়াম (Potassium), Na= সোডিয়াম (Sodium), Fe= লোহা (Iron), Cu= তামা (Copper), Mn= ম্যাঙ্গানিজ (Manganese), Zn= দস্তা (Zinc)

Table 3: বিভিন্ন প্রকার প্রচলিত শাকের থেকে প্রাপ্ত ক্যারোটিন (Carotene) এবং ভিটামিনের (mg/100g; Vitamin B7, B9, Vitamin K1: µg/100g) পরিমান (Source: Longvah et al., 2017)


Vitamin B1= থিয়ামিন (Thiamin), Vitamin B2= রাইবোফ্লাভিন (Riboflavin), Vitamin B3= নিয়াসিন (Niacin), Vitamin B5= প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড (Pantothenic acid), Vitamin B6= পাইরিডক্সিন (Pyridoxine), Vitamin B7= বায়োটিন (Biotin), Vitamin B9= ফলিক অ্যাসিড (Folic acid), Vitamin E = টোকোফেরোল (Tocopherol), Vitamin C= এস্করবিক অ্যাসিড (Ascorbic acid), Vitamin K1= ফাইলোকুইনোন (Phylloquinone)

বিটা ক্যারোটিন থেকে ভিটামিন-A সংশ্লেষিত হয়। কাজেই খাদ্যের মাধ্যমে বিটা ক্যারোটিন গ্রহণ ভিটামিন A-র অভাব দূরীকরণে সাহায্য করবে। বেশিরভাগ শাকের ক্ষেত্রে বিটা ক্যারোটিন বেশ অধিক পরিমানে পাওয়া যায় (Akhtar et al., 2012)।  যেমন প্রতি ১০০ গ্রাম লাল শাকে ৮৪৫৭ মাইক্রোগ্রাম, বেথুয়া শাকে ১০৭৫ মাইক্রোগ্রাম, মেথি শাকে ৯২৪৫ মাইক্রোগ্রাম, কচু শাকে ৫৭৫৮ মাইক্রোগ্রাম, সরিষা শাকে ২৬১৯ মাইক্রোগ্রাম, কুমড়ো শাকে ১৪৫৫ মাইক্রোগ্রাম, মুলো শাকে  ২৫৯১ মাইক্রোগ্রাম, পালং শাকে ২৬০৫ মাইক্রোগ্রাম বিটা ক্যারোটিন পাওয়া যায়। ক্যারোটিন আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Anti-oxidant) হিসেবেও কাজ করে। কাজেই শাক অধিক মাত্রায় ক্যারোটিন ধারণ করে বলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এক্টিভিটিও বেশ অধিক হয়, যা মানবদেহের জন্যে উপকারী।

অধিকাংশ শাকে, বিশেষত কচু শাক, পালং শাক, সরিষা শাক ইত্যাদিতে  ভিটামিন B9-র পরিমান অধিক হয়ে থাকে। ভিটামিন B9 ফলিক অ্যাসিড বা ফোলেট নামে পরিচিত। এটি  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। লোহিত রক্ত কণিকা (Red blood corpuscle) নির্মাণে এবং এর ফল অনুসারে এনিমিয়া (Anemia) প্রতিরোধ করতে ফোলেটের গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়াও DNA সংশ্লেষণে (DNA synthesis) এবং মেরামতে (DNA repair) ফোলেট প্রয়োজনীয়। ফোলেটের অভাবে নিউরাল টিউব ডিফেক্ট (Neural tube defect) হয়ে থাকে। ফ্যাট মেটাবলিসম (Fat metabolsim)-র ক্ষেত্রেও ফোলেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ওবেসিটি (Obesity) কমাতে এর গুরুত্ব রয়েছে (da Silva et al., 2014)। অস্টিওব্লাস্ট (Osteoblast/হাড় গঠনে প্রয়োজনীয় কোষ) এবং অস্টিওক্যালসিন (Osteocalcin/নন-কোলজিনীয় প্রোটিন হরমোন) মেটাবোলিজমে ভিটামিন K1-র গুরুত্ব অনেক। যেহেতু শাক অধিক পরিমানে ভিটামিন K1  ধারণ করে তাই শাক খেলে হাড় গঠনের উন্নতি হয় (Sim et al., 2020)। আবার ক্যালসিয়ামের পরিমানও শাকে অধিক থাকে যা মানবদেহের জন্যে অত্যন্ত উপযোগী।

কাজেই এই ছোট একটি আলোচনার মাধ্যমে বোঝা গেল শাকের গুরুত্ব। প্রতিদিন আহারের পাতে শাক অবশ্যই থাকুক, এর ফলে আবশ্যক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলি যেমন শরীরে প্রবেশ করবে তেমনই চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে এই উন্নত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন শাকগুলি অমিল বা অবলুপ্ত হয়ে যাবে না।

তথ্য সহায়তা (References)

Akhtar, S.; Ahmed, A.; Randhawa, M.A.; Atukorala, S.; Arlappa, N.; Ismail, T.; Ali, Z. 2013. Prevalence of vitamin A deficiency in South Asia: causes, outcomes, and possible remedies. Journal of Health Population and Nutrition 31(4), 413-423. https://doi.org/10.3329/jhpn.v31i4.19975 

Akhtar, S.; Karak, C.; Biswas, P.; Chattopadhyay, A.; Hazra, P. 2012. Indigenous leafy vegetable: A potential source of β-carotene and ascorbic acid. International Journal of Vegetable Science 18(4), 370-375. https://doi.org/10.1080/19315260.2011.649163 

da Silva, R.P.; Kelly, K.B.; Rajabi, A.A.; Jacobs, R.L. 2014. Novel insights on interactions between folate and lipid metabolism. Biofactors 40(3), 277-283. https://doi.org/10.1002/biof.1154 

Konsam, S.; Thongam, B.; Handique, A.K. 2016. Assessment of wild leafy vegetables traditionally consumed by the ethnic communities of Manipur, northeast India. Journal of Ethnobiology and Ethnomedicine 12, 9. https://doi.org/10.1186/s13002-016-0080-4 

Longvah, T.; Ananthan, R.; Bhaskaracharya, K.; Venkaiah, K. 2017. Indian Food Composition Tables. National Institute of Nutrition (Indian Council of Medical Research), Hyderabad, India.

McLean, E.; Cogswell, M.; Egil, I.; Wojdyla, D.; de Benoist, B. 2009. Worldwide prevalence of anaemia, WHO vitamin and mineral nutrition information system, 1993-2005. Public Health Nutrition 12(4), 444-454. https://doi.org/10.1017/S1368980008002401 

Mishra, S.; Maikhuri, R.K.; Kala, C.P.; Rao, K.S.; Saxena, K.G. 2008. Wild leafy vegetables: A study of their subsistence dietetic support to the inhabitants of Nanda Devi Biosphere Reserve, India. Journal of Ethnobiology and Ethnomedicine 4, 15. https://doi.org/10.1186/1746-4269-4-15

Sim, M.; Lewis, J.R.; Prince, R.L.; Levinger, I. et al. 2020. The effect of vitamin K-rich green leafy vegetables on bone metabolism: A 4-week randomised controlled trial in middle-aged and older individuals. Bone Reports 12, 100271. https://doi.org/10.1016/j.bonr.2020.100274 

Timoshnikov, V.A.; Kobzeva, T.V.; Polyakov, N.E.; Kontoghiorghes, G.J. 2020. Redox interactions of vitamin C and iron: inhibition of the Pro-Oxidant activity by Deferiprone. International Journal of Molecular Science 21(11), 3367. http://doi.org/10.3390/ijms21113967


রাজমহল: পর্ব-২ (Rajmahal: Part-2)

সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)  রাজমহল: পর্ব-১  -র পর- ঘুম ভাঙলো প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের শব্দে। বাইরে তখন খুবই কুয়াশা, হোটেলের ঘরের কাঁচের ...