পৃষ্ঠাসমূহ

পাঁচমাড়ি (Pachmarhi)

সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)

সময়ের অপ্রতুলতা জীবনধারণের সবক্ষেত্রে উপলব্ধি করলেও, বোধহয় সর্বাধিক প্রকট হয়ে ওঠে দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনের মধ্যে ভ্রমণের সময় অনুসন্ধানেপাঁচমাড়ি ভ্রমণের সময়েও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মধ্যপ্রদেশের বালাঘাটে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতাম কিছুকাল, সেই সময়েই এক ডিসেম্বরের শেষদিকে দিন দুয়েকের জন্যে পাঁচমাড়ি ভ্রমণ। বালাঘাট থেকে সিওনি, ছিন্দওয়াড়া হয়ে হোসাঙ্গাবাদ জেলায় (বর্তমান নর্মদাপুরম জেলা) অবস্থিত পাঁচমাড়ির দূরত্ব ২৬৫-৭০ কিলোমিটার, গাড়িতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে ছয় ঘন্টা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে রাতের আহার শেষে যাত্রা শুরু, ঘড়িতে তখন ১০ টা। একখানি ইনোভা গাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, চালক ছাড়া আমরা পাঁচজন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১০০ মিটার উচ্চতায় ক্যাপ্টেন জেমস ফরসিথ আবিষ্কৃত পাঁচমাড়ি হিল স্টেশনটিতে যখন পৌঁছলাম তখন ভোর সাড়ে চার-টেআকাশে লালচে আভা, পাখিদের জেগে ওঠা, শীতল হাওয়ার স্পর্শ, ঊষাকালের পবিত্রতা, এক অসাধারণ অনুভূতির উপলব্ধি, সাতপুরার রানী জেগে উঠছেন।

হোটেলে ওঠা, একটু বিশ্রাম আর প্রাতঃরাশ সেরে বেরিয়ে পড়লাম। প্রতিটা পর্যটন স্থানের মতন পাঁচমাড়িতেও  কিছু স্থানীয় নিয়ম রয়েছে। যেমন বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখার জন্যে স্থানীয় গাড়ি ভাড়া করাটাই এখানে প্রচলিত। আসলে পর্যটন নির্ভর স্থানীয় অধিবাসীদের আর্থিক উন্নতিসাধনের একটি পথ। আমরাও একটি গাড়িভাড়া করে চললাম। প্রথম দ্রষ্টব্য 'পান্ডব গুহা' বেলেপাথর নির্মিত পাঁচটি গুহা যা 'পাণ্ডব গুহা' নামে পরিচিত, যা থেকে এই স্থানের নাম পাঁচমাড়ি ('পাঁচ' = পাঁচ, 'মাড়ি' = গুহা), বর্তমানে ভারতীয় প্রত্নতাত্বিক বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী পান্ডবগণ নির্বাসনকালের অজ্ঞাতবাসের সময়ে গুহাগুলিতে বসবাস করেছিলেন। হয়তো এই বিশ্বাসের সঙ্গেই সামঞ্জস্য রেখে, বৃহৎ এবং সর্বাপেক্ষা অধিক বায়ু চলাচলের উপযোগী গুহাটি দ্রোপদীর, সর্বাপেক্ষা অন্ধকারময় গুহাটি মহাবলশালী ভীমের গুহা বলে বর্ণনা করা হয়। 

প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং ঐতিহাসিকগণের মতানুসারে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়কালে বৌদ্ধ সাধুগণ বিহার রূপে এই গুহাগুলি নির্মাণ করেন। অপর পণ্ডিতগণ আবার গুহার উপরিভাগে অবস্থিত ইষ্টকনির্মিত গঠনগুলিকে বৌদ্ধস্তূপ বলে ধারণা করেন এবং মৌর্য সম্রাট অশোকের শাসনকালে এগুলি নির্মিত হয়েছিল বলে মত প্রদান করেন। 

এরপরের  দ্রষ্টব্য 'হান্ডি খো', আর বিশ্রাম। হান্ডি খো  একটি অশ্বক্ষুরাকৃতি গিরিখাত।  প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এ স্থলে পূর্বে একটি হ্রদ ছিল যা কোনো এক দৈত্যের অগ্নিসম শ্বাস-প্রশ্বাসের ফলে শুকিয়ে যায়। অজস্র লোককথা, বিশ্বাস প্রচলিত এ স্থানে; প্রতিটি প্রস্তর, প্রতিটি শৈল শ্রেণী, প্রতিটি গুহা এখানে অতীতের কাহিনী শোনায়। দ্বিপ্রাহরিক আহার সেরে ভগ্নদশাগ্রস্থ, পোড়া বেগম মহল এবং তৎসংলগ্ন মাতা অম্বা-র মন্দির দর্শন।




কাহিনীর মায়াজালে কখন যে সুদূর অতীতের সেই সময়ে পাড়ি দিয়েছিলাম, তা জানিনা ঘুম ভাঙলো বেশ ভোরে, ঘড়িতে তখন পাঁচটা বাজে, এবারের পাঁচমাড়ি বেড়ানোর অন্তিম দিন আজ। দ্রষ্টব্য জটা শংকর গুহা। পুরাণ অনুসারে ভগবান মহাদেবের (শিব) আশীর্বাদধন্য, বরপ্রাপ্ত ভস্মাসুর উন্মত্তের ন্যায় আশীর্বাদদাতা স্বয়ং মহাদেবের উপরেই বর দ্বারা প্রাপ্ত শক্তি পরীক্ষা করতে উদ্যত হন। ভগবান শিব উপায়ান্তর না দেখে এই গুহাতেই নিজেকে আড়াল করেন এবং ভগবান বিষ্ণু মোহিনীবেশে দুর্মতি ভস্মাসুরকে বিভ্রান্ত করে হত্যা করেন। এই কাহিনী এই স্থানের মাহাত্ম্যকেই প্রকাশ করে।





এ স্থানের অপর দ্রষ্টব্য শৈলীক গড়ন
, স্তরবিন্যাস, আর গঠন ইত্যাদি। 

স্থানীয় জৈব সম্পদ এখানে উল্লেখযোগ্যভাবে চোখে পড়ার মতন, যেমন কন্দমূল যা রাম কন্দমূল নাম পরিচিত, স্থানীয় একধরণের বৃহদাকার পেঁয়াজের প্রজাতি ইত্যাদি। এইগুলি স্থানীয় দোকানগুলিতে বিক্রী হয়। 

এ অঞ্চলে পাহাড়ের ক্লিফ গুলিতে প্রচুর মৌচাক রয়েছে, আন্দাজ করা যায় ঐগুলি জায়েন্ট (Giant) /রক (Rock) মৌমাছির চাক। ওই মধুও দোকানগুলিতে বিক্রি হতে দেখেছি। এই অঞ্চলটিতে একটি মৌমাছি কেন্দ্রিক পর্যটন (Api-tourism) কেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে, পাহাড়ের ক্লিফগুলি তে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ক প্রদর্শনীশালা গড়ে তোলা ইত্যাদি এই পর্যটনের কেন্দ্র হতে পারে। এরূপ মৌমাছি কেন্দ্রিক পর্যটন ইউরোপের একাধিক দেশে রয়েছে যা স্থানীয় মৌমাছি পালনকে তথা প্রাকৃতিক সংস্থানের বিকাশে সাহায্য করে এবং এর মাধ্যমে যে স্থানীয় আর্থিক বিকাশলাভ হতে পারে তা বলাই বাহুল্য। 

এবার ফেরা, সেই একই পথে। অনেক স্থান বাকি রইলো, হয়তো আবার কখনো সাতপুরায় ফিরে আসবো সেই স্থানগুলিকে দেখার জন্যে।



ডিসেম্বর, ২০১৮

পুষ্টি সুরক্ষা এবং খাদ্য সংস্থান- পর্ব-১: সূচনা (Nutrition Security and Food - Part-1: Introduction)

 সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)

বর্তমান ভারতবর্ষের তথা পৃথিবীর অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো অপুষ্টি। ভারতবর্ষের দিকে দৃকপাত করলে, ক্ষুধা এবং পুষ্টি সংক্রান্ত সমসাময়িক কালে যে সকল প্রতিবেদন উঠে আসছে তার কোনোটিই যে অতি আশাপ্রদ নয় এ কথা বলাই বাহুল্য। স্বাধীন ভারতবর্ষে দেশবাসীর খাদ্য সুরক্ষা হেতু একাধিক প্রকল্পের প্রবর্তন হয়েছে। ক্রমে বোঝা গেছে খাদ্যের পরিমান থেকেও পুষ্টির বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, আশা করা যায় হয়তো আরও প্রকল্প প্রবর্তন করা হবে। তবে এ কথা সঠিক নয় যে এই প্রকল্পগুলির ফলাফল আমরা পাইনি, অবশ্যই এগুলির মাধ্যমে কাজ হয়েছে তবে তা পর্যাপ্ত নয়, যদি হতো তবে আজ সমীক্ষাগুলিতে এই রকম হৃদয় বিদারক চিত্র উঠে আসত না। ২০২১ গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (Global Hunger Index) স্কোর গণনা করার জন্য পর্যাপ্ত তথ্য বা ডেটা (Data) সহ ১১৬ টি দেশের মধ্যে ভারতবর্ষ ১০১ তম স্থানে অবস্থান করছে ৷ গত একুশ বছরে গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স স্কোর ৩৮.৮ (২০০০ সালে) থেকে ২৭.৫ (২০২১ সালে) এসেছে, এটি অবশ্যই উন্নতির লক্ষণ তবে তার গতি অতি মন্থর, আশাপ্রদ নয়। পাঁচ বছরের নীচে শিশু মৃত্যুর হার এবং পাঁচ বছরের নীচে স্টান্টিং (Stunting) শিশুর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে তবে ওয়েস্টিং (Wasting) শিশু এবং অপুষ্টি জনিত জনসংখ্যার ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্রটি প্রতিভাত হচ্ছে। আবার ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভের (National Family Health Survey) মাধ্যমে যে চিত্র উঠে এসেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে শিশু এবং মহিলা দু'ক্ষেত্রেই এনিমিয়া (Anaemia), স্থূলতা (Obesity) পূর্বের (NFHS-4) তুলনায় বর্তমানে (NFHS-5) বৃদ্ধি পেয়েছে (Table 1, Figure 1) । 


Table 1: ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে অনুযায়ী নির্বাচিত কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের (%) তুলনামূলক চিত্র (Data obtained from National Family Health Survey,  http://rchiips.org/nfhs/)

Parameters

NFHS-3*

2005-2006

NFHS-4

2015-2016

NFHS-5

2019-2021

U

R

T

U

R

T

U

R

T

Children <5 years are stunted

37.4

47.2

44.9

31.0

41.2

38.4

30.1

37.3

35.5

Children <5 years are wasted

19.0

24.1

22.9

20.0

21.5

21.0

18.5

19.5

19.3

Children <5 years are underweight

30.1

43.7

40.4

29.1

38.3

35.8

27.3

33.8

32.1

Children within 6-59 months years are anemic

72.2

80.9

78.9

56.0

59.5

58.6

64.2

68.3

67.1

Women (15-49 years) anemic

51.5

58.2

56.2

51.0

54.4

53.2

54.1

58.7

57.2

Pregnant (15-49 years) anemic

54.6

59.0

57.9

45.8

52.2

50.4

45.7

54.3

52.2

Men (15-49 years) anemic

17.2

27.7

24.3

18.5

25.3

22.7

20.4

27.4

25.0

Women having BMI below normal

19.8

38.8

33.0

15.5

26.7

22.9

13.2

21.2

18.7

Men having BMI below normal

17.5

33.1

28.1

15.4

23.0

20.2

13.0

17.8

16.2

Women obese

28.9

8.6

14.8

31.3

15.0

20.6

33.2

19.7

24.0

Men obese

22.2

7.3

12.1

26.6

14.3

18.9

29.8

19.3

22.9

Women having blood sugar- high

Not Applicable

6.9

5.2

5.8

6.7

5.9

6.1

Women having blood sugar- very high

3.6

2.3

2.8

8.0

5.5

6.3

Men having blood sugar- high

8.8

7.4

8.0

7.8

7.0

7.3

Men having blood sugar- very high

4.4

3.5

3.9

8.5

6.5

7.2

U= Urban; R= Rural; T= Total

*‘3 years’ was considered instead of ‘5 years’ for children. (Data obtained from National Family Health Survey, Govt. of India)



Figure 1: ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে অনুযায়ী নির্বাচিত কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের (%) তুলনামূলক চিত্র. (1) Children <5 years are stunted, (2) Children <5 years are wasted, (3) Children <5 years are underweight, (4) Children within 6-59 months years are anemic, (5) Women (15-49 years) anemic, (6) Pregnant (15-49 years) anemic, (7) Men (15-49 years) anemic, (8) Women having BMI below normal, (9) Men having BMI below normal, (10) Women obese, (11) Men obese, (12) Women having blood sugar- high, (13) Women having blood sugar- very high, (14) Men having blood sugar- high, (15) Men having blood sugar- very high. (Graph has been created from the data obtained from National Family Health Survey, http://rchiips.org/nfhs/)

একথাও অনস্বীকার্য যে জন সচেতনতারও একটা গুরুত্ব রয়েছে, অতএব খাদ্যের গুণাগুণ সম্বন্ধে, পুষ্টির গুরুত্ব বিষয়ে অবহিত হওয়া প্রয়োজন। অধিক প্রচলিত খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি তুলনামূলকভাবে উপেক্ষিত খাদ্য সংস্থানগুলির দিকেও মনোনিবেশ করা আবশ্যক। একটু খোলসা করে বলার প্রয়োজন। ভারতবর্ষের কোনো কোনো জনজাতির খাদ্যের মধ্যে মিলেটের প্রাধান্য দেখা যায়, কোনো জনজাতির মধ্যে কীট-খাদ্যের (Edible insects) প্রচলন রয়েছে (Chakravorty et al., 2013), আবার কোথাও শামুক-গুঁড়ি-গুগলিকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয় (Baghele et al., 2021), ইত্যাদি। এরকম উদাহরণ অনেক রয়েছে। এই উপেক্ষিত খাদ্য সংস্থানগুলির পুষ্টিগুণ, পুষ্টির সুরক্ষায় তার সম্ভাব্য ভূমিকা, এবং অবশ্যই প্রকৃতির ধারণক্ষমতা (Sustainability) নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন তবে এই বিষয়ে বিশদে আলোচনার পূর্বে খাদ্য এবং খাদ্য নির্ধারণের উপায়ের উপর একটা দৃষ্টিপাত প্রয়োজন এবং তারপরে আগামী কয়েকটি পর্বে এই প্রকার কম পরিচিত স্বল্প ব্যবহৃত খাদ্যবস্তুগুলি (Lesser-known অথবা underutilized foods) নিয়ে আলোচনা করবো। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে খাদ্য তথা পুষ্টি সুরক্ষা আজ এক বিশ্বব্যাপী সমস্যা, তবে এটাও সঠিক যে সমস্যাটির স্থানীয় ভাবে সমাধানের পথ খোঁজাটাও উল্লেখযোগ্য।

খাদ্য এবং খাদ্য নির্ধারণের উপায়

জীব যে বাস্তুতন্ত্রে বসবাস করে সেখান থেকেই তার জীবনধারণের প্রয়োজনীয় উপাদান, যার মধ্যে খাদ্য অন্যতম, খুঁজে নেয়।  মানুষও তার ব্যতিক্রম নয়। সামুদ্রিক উপকূলের মানুষজন সামুদ্রিক খাদ্যের উপর ভরসা করে, যে অঞ্চলে জলা জমির আধিক্য সেখানে মানুষ মাছ ইত্যাদি খেয়ে থাকেন, আবার জঙ্গল অধ্যুষিত অঞ্চলে যেসব জনজাতি বসবাস করেন তারা নানা ধরণের জংলী ফল মূল বা প্রাণীর মাংস খেয়ে থাকেন। সাধারণভাবে বুঝতে গেলে সে সকল বস্তু আহরণে কম সময় আর শক্তি লাগে (বস্তু থেকে প্রাপ্ত শক্তি বস্তু সংগ্রহের শক্তির থেকে বেশি হওয়া প্রয়োজন) এবং যা খেলে শারীরিকভাবে ভালো থাকা যায় তাকেই খাদ্য বলে গ্রহণ করে থাকে। মানুষের ক্ষেত্রে সামাজিক অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্যই আরো অনেকগুলি স্থিতিমাপক রয়েছে যা যথাসময়ে আলোচনা করবো।

আবার খাদ্যাভ্যাসের ফল হিসেবে বিভিন্ন জনজাতির জিনগত কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্যণীয়, যেমন ইউরোপ এবং আফ্রিকা মহাদেশের জনজাতি যারা পশুপালন করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের মধ্যে দুগ্ধের প্রোটিন বিপাকক্রিয়ার জন্যে প্রয়োজনীয় উৎসেচকের জিন ক্রিয়াশীল (Ranciaro et al., 2014; Anguita-Ruiz et al., 2020), কিংবা এস্কিমো বা ইনুইটদের (Inuit) সামুদ্রিক মাছের মাধ্যমে ভিটামিন D-র প্রয়োজনীয়তা মিটে যাওয়ায় নাতিশীতোষ্ণ (Temperate) অঞ্চলের অন্যান্য অধিবাসীদের মতন স্বল্পমাত্রায় মেলানিন সংশ্লেষের প্রয়োজন হয়না (Jablonski and Chaplin, 2000; Hanel and Carlberg, 2020), আবার যে সকল জনজাতি শিকার করে খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে তাদের ডিটোক্সিফিকেশনের (Detoxification) ক্ষমতা সাধারণত অধিক হয়ে থাকে (Tawe et al., 2018) সহজেই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বোঝা যায় জনজাতির জিন বিভিন্ন পরিবেশ বা বাস্তুতন্ত্রের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। বলাই বাহুল্য এটি একদিনে গড়ে ওঠেনি, দীর্ঘসময়ের মাধ্যমে তা বিবর্তিত হয়েছে।

বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ফল হিসেবে অনেক নেতিবাচক পরিণাম উঠে এসেছে যা থেকে ধারণা করা যায় যে পুরোনো খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা শুধুমাত্র ঐতিহ্য ধরে রাখার আকুলতা নয় বরং অনেক ক্ষেত্রেই তা অত্যাবশ্যক। কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি হয়তো বোঝাতে সমর্থ হবো।  যেমন আমেরিকার আরিজোনা (Arizona) অঞ্চল যেখানে কিছু ইন্ডিয়ান জনজাতির বাস। রুক্ষ অঞ্চল, জলের অভাব কাজেই অধিবাসীরা সাধারণত ক্যাকটাস জাতীয় গাছের ফল, কিছু বিন (legume) জাতীয় খাদ্য খেয়ে জীবন ধারণ করতো। পরবর্তীকালে ওই অঞ্চলে একটি খাল নির্মাণ করা হয় এবং জলের সমস্যার সমাধান হয়। এটা অনস্বীকার্য যে খাল নির্মাণ, জলের প্রাচুর্য এবং এরফলে গম চাষ, গম আর চিনি  উৎপাদন এসবই উন্নয়নের পরিমাপক ছিল কিন্তু অধিবাসীদের খাদ্যের রূপান্তরটি (কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (Glycemic Index) যুক্ত ক্যাকটাস ফল আর বিন থেকে  অধিক গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত গম আর চিনি দিয়ে প্রস্তুত খাদ্য) অনিবার্যভাবে ঘটে যার পরিণামস্বরূপ আজ মধুমেহ (Diabetes) রোগের প্রাধান্য বেড়েছে ওই জনগোষ্ঠীতে (Brand et al., 1990)। অথচ কয়েক দশক পূর্বে পর্যন্তও এই রোগের কোনো চিহ্ন ওই জনগোষ্ঠীতে লক্ষ্য করা যায়নি। দক্ষিণ ভারতের কোলিহিলসের জনজাতিরা যে মিলেট চাষ করতো তার পুষ্টিগত মাত্রা চাল বা গমের পুষ্টিমাত্রা থেকে অধিক হওয়া সত্ত্বেও মিলেট চাষ প্রতিস্থাপন করা হয় অপেক্ষাকৃত কম পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্যশস্যের সাথে (Ravi et al., 2010)। এরকম উদাহরণ অনেক বর্তমান এবং এর আপাত কারণও বর্তমান। সমগ্র বিশ্ব জুড়ে মানব সভ্যতা অনেক খাদ্যশস্যের মধ্যে কয়েকটি মাত্র ফসলের উন্নতিতে যথাসাধ্য প্রচেষ্ট, আর এর মাধ্যমে একটা খাদ্যতালিকাগত রূপান্তর ঘটছে বা ঘটেছে। আলু এবং টমেটোর উৎপত্তি দক্ষিণ আমেরিকায়  (আন্দিজ এবং মেক্সিকোতে) হলেও আজ সমগ্র পৃথিবীতে এগুলি ব্যাপৃত (Nunn and Qian, 2010)। আবার অনেক শাকসবজি আজকে আমাদের খাদ্যতালিকা থেকে প্রায় বিদায় নিয়েছে এবং প্রজাতি সংরক্ষণ ও ব্যবহারের উপর যত্নশীল না হলে অদূর ভবিষ্যতে আরো বেশ কিছু খাদ্যশস্য তালিকা থেকে মুছে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেন কয়েকটি মাত্র ফসলের উপর মানব সভ্যতা যত্নবান হয়েছে তার ব্যাখ্যা হয়তো রয়েছে, যেমন অধিক ফলনশীলতা, অধিক সহনশীলতা, পরিবেশ মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, সহজ চাষ ইত্যাদি, কিন্তু তারপরেও অন্যান্য খাদ্যশস্যগুলিকে প্রতিস্থাপন কিংবা বিপন্ন করা বিজ্ঞানসম্মত নয়।

মানব সভ্যতায় কৃষিকাজের (পশুপালন সহ) ইতিহাস মাত্র দশ হাজার বছরের এবং বাস্তুতন্ত্র আর পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে খাদ্যতালিকাও সদা পরিবর্তনশীল। আগেই বলেছি যে প্রাপ্ত এবং ব্যবহৃত শক্তি খাদ্যবস্তু নির্ণয়ের একটি অন্যতম প্রধান পরিমাপক। কাজেই কৃষিকাজ যে প্রাধান্য পাবে সেটা বোঝা যায় কারণ খাদ্য বস্তু আহরণের জন্য যে পরিমান শক্তি প্রয়োজন তা যে অধিক হবে তা বলাই বাহুল্য কারণ সেটি সুনিশ্চিত নয়। দ্বিপ্রাহরিক বা রাত্রিকালীন ভোজনের পূর্বে কোনো জন্তুর (ধরি, হরিণ) পিছনে তাড়া করে তাকে শিকার করে কিংবা কয়েক মাইল পাড়ি দিয়ে ফল মুলাদি সংগ্রহ ক্ষুধা  নিবৃত্তি করা যে খুব সহজ ছিল না তার জন্য কষ্টকল্পনা করতে হয়না। ফলে কোনো সহজসাধ্য খাদ্যের প্রয়োজন ছিল, মানুষ শিখেছিল কিভাবে নিজে ফসল ফলানো যায় তথা খাদ্য উৎপাদন করা যায়। মানুষ সেই  প্রাণীকেই পালন করা শুরু করে যাকে পোষ মানানো সহজ, সেই উদ্ভিদ প্রজাতিকে কৃষির জন্যে প্রথম ব্যবহার করেছিল যেটির প্রাচুর্য সেই অঞ্চলে ছিল এ কথা মানতে কষ্ট হয়না। যেটি সহজে ফলন করা যাবে সেটির দিকেই মানুষ ঝোঁকে কারণ মূল নিম্নাবস্থিত কারণটি কিন্তু একই থাকে 'শক্তির পার্থক্য'। উদরপূর্তি ছিল প্রধান উদ্দেশ্য, পুষ্টিজ্ঞান সভ্যতার ঊষাকালে আশা করা যায়না। এমনকি বর্তমান পৃথিবীতেও খাদ্য সুরক্ষায় অধিক মননিবেশ করা হয়েছে এবং পরে তা পুষ্টি সুরক্ষায় উন্নীত হয়েছে। ভারতবর্ষের ক্ষেত্রেও খাদ্য সুরক্ষায় প্রথমে উৎপাদন বাড়ানোর পক্ষেই পদক্ষেপ করা হয়েছে, সবুজ বিপ্লবের ফলশ্রুতিতেই আজ আমাদের দেশ খাদ্যের জন্যে স্বনির্ভর। তারপর ধীরে ধীরে এসেছে খাদ্যগুণ উন্নীতকরণের গবেষণা যেমন অ্যামিনো অ্যাসিড ফর্টিফায়েড খাদ্যশস্য কিংবা খনিজ এবং ভিটামিন ফর্টিফায়েড খাদ্যশস্য। যাইহোক, মূল বিষয়ে ফেরা যাক। মানব সভ্যতার মাত্র দশ হাজার বছরের কৃষিকাজের সময়কালটি পৃথিবীতে মানুষ আবির্ভাবের (বিবর্তনের মাধ্যমে) তুলনায় নিতান্তই নগণ্য অর্থাৎ হরিণের পশ্চাদ্ধাবন করে ক্ষুধা নিবৃত্তির সময়কালটি অনেক বেশি হওয়ায় মানব শরীর (দেহতত্ব) এবং জিনগত গঠন সেই অনুসারেই হয়েছে। সহজভাবে, খাদ্য থেকে প্রাপ্ত শক্তি আর খাদ্য সংগ্রহের জন্যে ব্যবহৃত শক্তির পার্থক্য অতিরিক্ত হওয়াটাও কাম্য নয় কারণ এর ফলস্বরূপ  স্থূলতা (Obesity), মধুমেহ, অন্যান্য বিপাক প্রক্রিয়া সম্পর্কিত ব্যাধি জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 'ফিস্ট এন্ড ফ্যামিন সাইকেল' (Feast and Famine Cycle) একটি প্রাসঙ্গিক হাইপোথিসিস (Darnton-Hill and Coyne, 1998)। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো পূর্বোল্লেখিত অপর শর্তটির উপর অর্থাৎ যা খেলে খাওয়ার পর শারীরিক ভাবে ভালো থাকা যায় তার উপর গুরুত্ব আরোপ করা উচিত। শুধুমাত্র উদর পূর্তি হলেই হবে না বা অতিরিক্ত শক্তিপ্রাপ্ত করলেই খাদ্যের গুণাগুণ বিচার হয় না, সমগ্র খাদ্যের মধ্যে প্রতিটি পুষ্টি উপাদান যেমন অ্যামিনো অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড, খনিজ এবং ভিটামিন এমন মাত্রায় থাকা উচিত যা তা দৈনিক চাহিদা কে পূরণ করে কারণ এই উপাদানগুলি আমাদের শরীর চালনার কাজ করে থাকে। এদের মধ্যে আবার কাউকে শরীর নিজে সংশ্লেষ করতে পারে, আবার কাউকে করতে পারেনা বা অতি স্বল্প মাত্রায় করে যা প্রয়োজনীয় মাত্রা থেকে কম, দ্বিতীয় প্রকারের উপাদানগুলোকে অত্যাবশ্যকীয় বলে গণ্য করা হয়। যথা সময়ে বিষয়গুলি সবিস্তারে আলোচনা করা যাবে, আপাতত ফিরে আসি খাদ্য নির্ধারণের তত্ত্বের বিষয়ে। এক্ষত্রে সহজভাবে ধরা যায় প্রথম আর দ্বিতীয় শর্তটি একে অন্যকে পরিপূর্ণ করে। একটি তুলনামূলক আলোচনা বিষয়টিকে বুঝতে সাহায্য করবে।  ধরা যাক দুই ব্যক্তি, একজন প্রস্তর নির্মিত অস্ত্রের সাহায্যে হরিণ শিকার করে তার মাংস দিয়ে নিজের ক্ষুধা নিবৃত্তি করেন আর অপর জন সুপারমার্কেট থেকে একটি খাদ্যবস্তু কিনে ক্ষুধা নিবারণ করেন। বোঝার সুবিধার্থে ধরা যাক দ্বিতীয় ব্যক্তিটি যে পয়সার বিনিময়ে খাদ্য ক্রয় করেন তা আয় করতে তাকে শারীরিক পরিশ্রম প্রথম ব্যক্তির তুলনায় কম করতে হয়। এখন যদি দুজনেই একই পরিমানের খাদ্য খান তবে তা দ্বিতীয় ব্যক্তিটিকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে না কারণ তার ওই পরিমান খাদ্যের ব্যবহার হয়না ফলে কিছু অংশ শরীরে জমা হয় আর আমাদের শরীর এখনো সেই ভাবে অভিযোজিত হয়নি আর এর পরিণামে স্থূলতা বাড়ে এবং সম্পর্কিত রোগগুলি বাড়ার সম্ভাবনা দেখা যায়।

পূর্বেই উল্লেখ করেছি সামাজিক অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের ক্ষেত্রে আরো বেশ কয়েকটি পরিমাপক রয়েছে। বাস্তুতন্ত্রের পাশাপাশি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোও খাদ্য নির্ধারণে ভূমিকা পালন করে।  কি রকম তা বর্তমান বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা করা যাক। ধরা যাক কোনো জনজাতি কোনো একটি বিশেষ (তা উদ্ভিদ বা প্রাণী যা কিছু জাতীয়ই হতে পারে) খাদ্য গ্রহণ করে, তারা খাদ্যটি তাদের পরিবেশ থেকে সংগ্রহ করে, কিন্তু তা উৎপাদন (কৃষির মাধ্যমে) করে না। এরফলে একসময় সেই  খাদ্যটির অপ্রাচুর্য অনিবার্য হয়ে পরে। জনজাতির মানুষ সংখ্যা তথা খাদ্যবস্তুটির চাহিদা বৃদ্ধি, বনাঞ্চলের আয়তন হ্রাস পাওয়া তথা জীব বা উদ্ভিদটির বাসস্থান সংকোচন, জলবায়ু পরিবর্তন, ইত্যাদি নানান কারণ দায়ী হতে পারে এই অপ্রাচুর্যের পিছনে। অনেক সময়েই এইসবের সম্মিলিত পরিণামস্বরূপ একদা বহুল পরিচিত খাদ্যবস্তুটি যোগান অনিয়মিত হয়ে যায়। আর বিশ্বায়নের যুগে যেভাবে খাদ্যতালিকার বিশ্বায়ন হচ্ছে তার চাপে অনেকসময়ই খাদ্যবস্তুটি হারিয়ে যাওয়ার পথে যায় বা হারিয়েও যায়। আধুনিক প্রযুক্তির সাথে ঐতিহ্যের মেলবন্ধন ঘটানো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়ে ওঠেনা, আর পাঁচটা বিষয়ের মতন এই বিষয়েও উদাসীনতা গ্রাস করে। তবে এর বিপরীত চিত্রও যে অমিল তা নয় (Meyer-Rochow et al., 2019), তবে সেগুলো বেশিরভাগ দেশান্তরের ছবি, প্রসঙ্গান্তরে বিশদে আলোচনা করবো।  

তথ্য সহায়তা (Reference)

Anguita-Ruiz, A.; Aguilera, C.M.; Gil, A. 2020. Genetics of lactose intolerance: An updated review and online interactive world maps of phenotype and genotype frequencies. Nutrients 12(9): 2689. http://www.doi.org/10.3390/nu12092689

Baghele, M.; Mishra, S.; Meyer-Rochow, V.B.; Jung, C.; Ghosh, S. 2021. Utilization of snails as food and therapeutic agents by Baiga tribals of Baihar tehsil of Balaghat district, Madhya Pradesh, India. International Journal of Industrial Entomology 43(2): 78-84. http://dx.doi.org/10.7852/ijie.2021.43.2.78 

Brand, J.C.; Snow, B.J.; Nabhan, G.P.; Truswell, A.S. 1990. Plasma glucose and insulin responses to traditional Pima Indian meals. American Journal of Clinical Nutrition 51(3): 416-420. http://www.doi.org/10.1093/ajcn/51.3.416

Chakravorty, J.; Ghosh, S.; Meyer-Rochw, V.B. 2013. Comparative survey of entomophagy and entomotherapeutic practices in six tribes of eastern Arunachal Pradesh (India). Journal of Ethnobiology and Ethnomedicine 9: 50. https://www.doi.org/10.1186/1746-4269-9-50

Darnton-Hill, I.; Coyne, E. 1998. Feast and Famine: socioeconomic disparities in global nutrition and health. Public Health Nutrition 1(1): 23-31. http://www.doi.org/10.1079/PHN19980005

Global Hunger Index. https://www.globalhungerindex.org/india.html, accessed 24th April 2022.

Hanel, A.; Carlberg, C. 2020. Vitamin D and evolution: Pharmacologic implications. Biochemical Pharmacology 173: 113595. http://www.doi.org/10.1016/j.bcp.2019.07.024

Jablonski, N.G.; Chaplin, G. 2000. The evolution of human skin coloration. Journal of Human Evolution 39(1): 57-106. http://www.doi.org/10.1006/jhev.2000.0403 

Meyer-Rochow, V.B.; Ghosh, S.; Jung, C. 2019. Farming of insects for food and feed in South Korea: tradition and innovation. Berl Münch Tierärztl Wochenschr. http://www.doi.org/10.2376/0005-9366-18056

National Family Health Survey. http://rchiips.org/nfhs/, 30th April 2022.  

Nunn, N.; Qian, N. 2010. The Columbian exchange: A history of disease, food, and ideas. Journal of Economic Perspectives 24(2): 163-188.

Ravi, S. B.; Swain, S.; Sengotuvel, D.; Parida, N.R. 2010. Promoting nutritious millets for enriching income and improved nutrition: A case study from Tamil Nadu and Orissa. In: Mal, B.; Padulosi, S.; Ravi, S.B. (Eds.). Minor Millets in South Asia: Learning from OFAD-NUS Project in India and Nepal. Biodiversity International, Maccarese, Rome, Italy and M.S. Swaminathan Research Foundation, Chennai, India. 185p. pp.19-46.

Ranciaro, A.; Campbell, M.C.; Hirbo, J.B.; Ko, W-Y.; Froment, A.; Anagnostou, P.; Kotze, M.J.; Ibrahim, M.; Nyambo, T.; Omar, S.A.; Tishkoff, S.A.; 2014. Genetic origins of lactase persistence and the spread of pastoralism in Africa. American Journal of Human Genetics 94(4): 496-510. http://www.doi.org/10.1016/j.ajhg.2014.02.009

Tawe, L.; Motshoge, T.; Ramatlho, P.; Mutukwa, N.; Muthoga, C.W.; Dongho, G.B.D.; Martinelli, A.; Peloewetse, E.; Russo, G.; Quaye, I.K.; Paganotti, G.M. 2018. Human cytochrome P450 2B6 genetic variability in Botswana: a case of haplotype diversity and convergent phenotypes. Scientific Reports 8: 4912. http://www.doi.org/10.1038/s41598-018-23350-1

রাজমহল: পর্ব-২ (Rajmahal: Part-2)

সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)  রাজমহল: পর্ব-১  -র পর- ঘুম ভাঙলো প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের শব্দে। বাইরে তখন খুবই কুয়াশা, হোটেলের ঘরের কাঁচের ...