সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
আমরা প্রায়ই খিচুড়ি খেয়ে থাকি। খিচুড়ির প্রধান উপকরণ চাল আর ডাল, এর সাথে কিছু সব্জি যোগ করে বেশ সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর এই খাদ্যটি প্রস্তুত করা হয়। একসময় বর্ষণমুখর দিনে যে উপাদেয় বস্তুটি পাতে পড়লে মন আহ্লাদে আটখানা হয়ে যেত, বর্তমান ব্যস্ত জীবনে তা একটি অপরিহার্য খাদ্য হয়ে উঠেছে। তবে খিচুড়িতে যদি চালের বদলে কখনও কখনও মিলেট ব্যবহার করা যায়, তবে এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে আবার একটু মুখের স্বাদ বদল করলে ভালোও লাগে। সাবুদানার বা ওটের খিচুড়ি এখন খুব পরিচিত। এই ব্লগটিতে আমি জোয়ায়ের খিচুড়ি প্রস্তুত করা নিয়ে আলোচনা করব।
মিলেটের পুষ্টিগুণের বিষয়ে পড়ুন, পুষ্টি সুরক্ষা এবং খাদ্য সংস্থান- পর্ব-২: মিলেট
জোয়ারের খিচুড়ির প্রধান উপাদান দুটি হলো জোয়ার আর ডাল। পরিবারের সদস্য সংখ্যার উপর নির্ভর করে যতটা জোয়ার নিতে হবে, ডালের পরিমান হতে হবে তার অর্ধেক। যেদিন এটি রান্না করা হবে তার পূর্বের দিন জোয়ার সারারাত (প্রায় ৮-১০ ঘন্টা) ভিজিয়ে রাখতে হবে।
পরদিন সেই ভেজানো জোয়ার প্রেসার কুকারে প্রায় ৮ থেকে ১০ টি সিটি দিয়ে উপযুক্তভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
মসুর বা মুগ যে কোনো ডাল-ই ব্যবহার করা যেতে পারে। ডাল ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সব্জির মধ্যে ব্যবহার করতে পারেন কড়াইশুঁটি, ফুলকপি, গাঁজর, কুমড়ো, টমেটো, বেল-পেপার বা ক্যাপসিকাম ইত্যাদি। সব্জিগুলি ধুয়ে কেটে নিতে হবে, কড়াইশুঁটি ছাড়িয়ে নিতে হবে। পেঁয়াজ কেটে নিতে হবে, কাঁচালঙ্কা কুঁচিয়ে নিতে হবে, আদা আর রসুন বেটে নিতে হবে।
এবার কড়াইতে তেল দিয়ে একটু উষ্ণ হলে তাতে জিরা, ধনে, পেঁয়াজ, আদা বাটা, রসুন বাটা, কুঁচোনো কাঁচালঙ্কা দিয়ে একটু নাড়িয়ে নিতে হবে। মিনিট দুয়েক নাড়িয়ে তার মধ্যে কেটে রাখা সব্জিগুলি দিয়ে একটু ভেজে নিন, পরিমান (স্বাদ অনুযায়ী) মতন নুন এবং হলুদ যোগ করুন। এরপর এর মধ্যে ডাল আর সিদ্ধ করে রাখা জোয়ার দিয়ে ভালোভাবে মিনিট পাঁচেক নাড়তে হবে। পরিশেষে জল দিয়ে সমস্ত উপকরণগুলিকে সিদ্ধ হতে দিন। আঁচ কমিয়ে মিনিট পনেরো কড়াইটিকে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে, প্রস্তুত হয়ে যাবে জোয়ারের খিচুড়ি।
জোয়ারের খিচুড়ির সাথে রায়তা, আঁচার, পাঁপড় ভালো সহযোগী হিসেবে কাজ করে। জোয়ারের দানাগুলি একটু মোটা এবং রুক্ষ, চালের মতন অতটা মসৃন নয়, এটি খাওয়ার সময় উপলব্ধি করতে পারেন। নতুন স্বাদ উপভোগ করুন। সকল খাদ্যশস্যকেই আহারে স্থান দিন, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সকলকেই ব্যবহার করুন, খাদ্য বৈচিত্র্য বাড়লে, পুষ্টির মান উন্নত হবে।





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন